চলতি বছর ৬৯ হাজার ৭০০ শ্রমিক নেবে ইতালি। এ উপলক্ষে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) কোটাসহ চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে দেশটির সরকার। গেজেট অনুযায়ী বাংলাদেশসহ ৩২টি দেশ থেকে কোটাভিত্তিতে ৫৯ হাজার শ্রমিক নেবে ইতালি। বাকি ১০ হাজার ৭০০ শ্রমিক পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে নেওয়া হবে।

চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশের আগে গত ১২ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে আবেদন জমা নেওয়া শুরু করেছে দেশটি। এবার বাংলাদেশসহ ৩২টি দেশ থেকে ১৭ হাজার স্থায়ী (নন-সিজনাল) এবং ৪২ হাজার মৌসুমি (সিজনাল) শ্রমিক নিয়োগ করবে দেশটি।

দুই ক্যাটাগরিতে নন-সিজনাল ভিসায় যারা আসবেন তারা দুই বছরের স্টে-পারমিট পাবেন আর যারা সিজনাল ভিসায় আসবেন তারা ৯ মাসের জন্য ইতালিতে বৈধভাবে থাকতে পারবেন। আবেদনের জন্য ইতালি ভিন্ন ভিন্ন তারিখ ঘোষণা করেছে। ২৭ জানুয়ারি থেকে নন-সিজনাল এবং ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সিজনাল ভিসার আবেদন জমা নেওয়া হবে। এভাবে একটানা ১৭ মার্চ পর্যন্ত চলবে আবেদন জমা নেওয়ার কাজ।

জানা যায়, চলতি বছর বাংলাদেশিদের জন্য সাধারণ স্পনসরের আবেদন করা কঠিন হবে। কারণ ইতালি এবার যেসব সেক্টরে নন-সিজনাল স্পনসর দিয়েছে সেসব সেক্টরে বাংলাদেশি মালিকানা নেই বললেই চলে। কনস্ট্রাকশন, ভারী যান চালানো, পর্যটন ও বড় হোটেল ব্যবসায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা এখনো তেমন আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি। ফলে নন-সিজনাল স্পনসরে দেশটিতে যাওয়া বাংলাদেশিদের জন্য কঠিন হবে।

এ খাতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ২৭ হাজার ৭০০ শ্রমিক আসতে পারবে। এর মধ্যে নির্দিষ্টভাবে আলবেনিয়া, আলজেরিয়া, বাংলাদেশ, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, কোরিয়া (রিপাবলিকা ডি কোরিয়া), কোস্টা ডি আভোরিও, এগিট্টো, এলসালভাদর, ইথিওপিয়া, ফিলিপাইন, গাম্বিয়া, ঘানা, জিয়াপ্পোন, গুয়াতেমালা, ভারত, কসোভো, মালি, মরক্কো, মরিশাস, মোল্দোভা, মন্টিনিগ্রো, নাইজার, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, রিপাবলিকা ডি ম্যাসেডোনিয়া দেল নর্ড, সেনেগাল, সার্বিয়া, শ্রীলঙ্কা, সুদান, তিউনিসিয়া, ইউক্রেন থেকে ১৭ হাজার শ্রমিক নেওয়া হবে।

এদিকে, মৌসুমি (সিজনাল) ভিসায় বাংলাদেশসহ ৩১টি দেশ থেকে ৪২ হাজার শ্রমিক নেবে ইতালি। এই খাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। তবে ২০২০ সালের মৌসুমি ভিসায় বাংলাদেশিরা এখনো তেমন একটা স্পনসর বের করতে পারেনি। সেক্ষেত্রে চলতি বছর আবেদন জমা দেওয়ার পর কতটা স্পনসর বের হবে তা নিয়ে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে আইনি পরামর্শক অ্যাড. আনিচুজ্জামান আনিস বলেন, ইতালিতে ২৭ জানুয়ারি ঘোষিত নন-সিজনাল (স্পনসর) ভিসার আবেদন আগের বছরগুলোর মতো উন্মুক্ত না। এবার ইতালিতে শুধু তিন ক্যাটাগরিতে আবেদন জমা দেওয়া যাবে। কনস্ট্রাকশন, ভারী যানচালক, বড় আবাসিক হোটেল ও পর্যটনের জন্য শ্রমিকরা আবেদন করতে পারবে।

তিনি বলেন, উল্লিখিত ক্যাটাগরির মালিকদের সঙ্গে বাংলাদেশি প্রবাসীদের তেমন সম্পর্ক নেই বললেই চলে। সেজন্য তাদের জন্য স্পনসরে আবেদন করা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। সেক্ষেত্রে কৃষি কাজের সিজনাল ভিসার আবেদন করা অনেকটা সহজ। ভালো মালিক পেলে চার-পাঁচ মাসের মধ্যে নুল্লাঅস্তা (ভিসা) পাওয়া সম্ভব।